শিক্ষা

ট্রাকচাপায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু : আন্দোলনের মুখে রাবি প্রক্টর প্রত্যাহার

ট্রাকচাপায় ক্যাম্পাসের ভেতরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী মাহমুদ হাবিব হিমেল নিহতের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. লিয়াকত আলীকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নিজ বাসভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এ বিষয়ে ঘোষণা দেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে প্রক্টর প্রত্যাহারের তথ্য এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সামনে উপাচার্য মহোদয় প্রক্টর প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রক্টর প্রত্যাহারের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।’

দুর্ঘটনার বিষয়ে জানার পরও প্রক্টর দায়িত্বে অবহেলা করেছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

এর আগে গতকাল রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে ট্রাকচাপায় শিক্ষার্থী মাহমুদ হাবিব হিমেলের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর থেকে ভবন নির্মাণ কাজে নিয়োজিত পাঁচটি ট্রাক ও নির্মাণশ্রমিকদের ঘরে আগুন দেওয়াসহ ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ ও উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় আবাসিক হল থেকে দল বেঁধে এসে যোগ দেন ছাত্রীরাও।

উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা নিজেদের সবচেয়ে নিরাপদ মনে করি। সেখানে যখন আমাদের সহপাঠীকে নিজের জীবন দিতে হয় তখন আদৌ ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা আছে কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং আমাদের বন্ধু মৃত্যুর বিচারের দাবিতে দাঁড়িয়েছি।

আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ক্যাম্পাসে অনিরাপদ এবং অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণকাজ চলছে। যার কারণে আজকের এই দুর্ঘটনা। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ঘটনার পর প্রক্টরকে জানানো হলে তিনি মিটিংয়ের অজুহাত দিয়েছেন। তিনি ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিকভাবে আসেননি। প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়ায় দুর্ঘটনার পর প্রায় দুই ঘণ্টা মরদেহ ঘটনাস্থলেই ছিল। তাহলে প্রক্টরকে কেন রাখা হয়েছে? আমরা প্রক্টরের প্রত্যাহার চাই।’

মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে দুর্ঘটনায় গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুব হাবিব হিমেল ক্যাম্পাসে ট্রাকচাপায় নিহত হন। তিনি শহীদ শামসুজ্জোহা হলের আবাসিক ছাত্র। এ ছাড়া তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ড্রামা অ্যাসোসিয়েশনের (রুডা) সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন।

এ সময় সিরামিক ও ভাস্কর্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান প্রামাণিক আহত হন। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

Back to top button