রাজনীতি

সিদ্ধিরগঞ্জের বিএনপি’র সম্মেলনকে কেন্দ্র করে হামলা

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে একটি গ্রুপের নেতাকর্মীরা হামলা ও ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে। এতে সম্মেলন পন্ড হয়ে গেছে। এ সময় সম্মেলনে আসা ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০ টায় সিদ্ধিরগঞ্জের গ্র্যান্ড তাজ পার্টি সেন্টারে এ সম্মেলন হবার কথা ছিল। সংঘর্ষে পার্টি সেন্টারটির প্রধান ফটক, কাঁচ, চেয়ার ও টেবিল ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকার কথা ছিল।

সম্মেলনে আসা সাধারণ নেতা-কর্মীরা জানায়, বিগত বিএনপি আমলের শুরুতে বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিনের জিআর টেক্সটাইল মিলে সর্বশেষ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির কমিটি হয়। এক সময় এ কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে সফর আলী ভূইয়াকে আহ্বায়ক ও মামুন মাহমুদকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সেই থেকে দীর্ঘদিন ধরে সিদ্ধিগঞ্জ থানা বিএনিপর কোন কমিটি নেই। কয়েকদিন পর পর একাধিক আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই বিচ্ছিন্নভাবে চলছিলো সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির কার্যক্রম। ফলে বর্তমান জেলা বিএনপি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির উদ্যোগ নেয়। যার সম্মেলন হওয়ার কথা ছিলো গতকাল শুক্রবার (১৫ এপ্রিল)। সাড়ে ৯ টায় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদের সমর্থক থানা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ব রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজের নেতত্বে একটি মিছিল সভাস্থলে স্লোগান নিয়ে প্রবেশ করার পরপরই তাদের উপর চড়াও হয় গিয়াসউদ্দিন বলয়ের নেতা-কর্মীরা।

এসময় নাসিক ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের একান্ত সহযোগী ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে দলিল লেখক ইকবাল হোসেন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদুল হকসহ সন্ত্রাসী বাহিনী একাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সংঘর্ষস্থলে হামলা চালায় বলে জানায় সম্মেলনে আসা সাধারণ নেতা-কর্মীরা। তাদের লাঠি-সোটা, লোহার রড দিয়ে হামলায় এসময় জেলা বিএনপির ভাপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, থানা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল হাই রাজু, সদস্য সচিব শাহ আলম, যুগ্ম-আহ্বায়ক রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজসহ ১০ নেতাকর্মী আহত হয়। এতে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে সম্মেলনস্থলে আসা সাধারণ নেতা-কর্মীরা। বররদ ভীতসন্ত্রস্ত সাধারণ নেতা-কর্মীরা দিকবিদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। সাবেক সংসদস্য গিয়াস উদ্দিনের কর্মী-সমর্থকরা জানায়, সম্মেলনে সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিন ও তার অনুগত কোন নেতাকর্মীদের জানানো হয়নি। এমনকি তাদেরকে কোন কমিটিতে রাখা হবে না বলে তারা অবগত হয়েছেন। এর মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সম্মেলনের দিনক্ষন ঠিক করা হলেও স্থানীয় নেতাকর্মীদের জানানো হয়নি বলে অভিযোগ উঠে। ফলে তারা শুক্রবার সকাল থেকেই সম্মেলনস্থলে অবস্থান নেন এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের তারা বিষয়গুলো অবহিত করবেন বলে জানান।

জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবি জানান, ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন, দলিল লেখক ইকবাল, মাজেদুল ইসলাম, আকবর, হারুন, জুয়েল, মহিউদ্দিন শিকদার, ভিডিও আবুলসহ এলাকার দাগী সন্ত্রাসীরা সম্মেলন স্থানে ঢুকে চেয়ার, টেবিল ভাংচুর করে। এ সময় একটি চেয়ার আমার শরীরে পড়েছে। পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে তাদের নির্দেশে সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। এ সম্মেলন বানচাল করার জন্য যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দল থেকে বহিস্কার করার নিদের্শ প্রদান করা হয়েছে। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ জানান, ওরা গত নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করেছে, তারা আওয়ামীলীগ ঘেঁষা। পরিকল্পিতভাবে সম্মেলনকে পন্ড করতে আওয়ামীলীগের ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসী কায়দায় লাঠি-সোটা ও রড দিয়ে বিএনপির সাধারণ নেতা-কর্মীদের উপর হামলা করা হয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য ও নাসিক ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন জানান, এখানে নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত দলীয় পদ পদবি থেকে। কোন কর্মসূচি থাকলেও নেতাকর্মীদের জানানো হয় না। আজ থানা বিএনপির সম্মেলনের ব্যাপারেও নেতাকর্মীদের কাউকে জানানো হয়নি। এতে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করতে গিয়ে নেতা-কর্মীরা সম্মেলন পন্ড করে দেয়।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, এটি তাদের অভ্যন্তরীণ একটি প্রোগ্রাম ছিল। সেখানে নিজেদের মধ্যে সমস্যা থাকতে পারে। এখন পর্যন্ত কোন আমরা অভিযোগ পাইনি।

Back to top button