সারাদেশ

মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন তদন্ত কর্মকর্তা

হেফাজত ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় আংশিক সাক্ষ্য প্রদান করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। 

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আগামী ১৯ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য্য করেছেন। এখন পর্যন্ত এই মামলায় ৪০ জন স্বাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৫ জনের পূর্ণ সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আরেকজনের আংশিক সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ২৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।

মামুনুল হকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, আল্লামা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামকে জেরা করা হয়েছে। আগামী তারিখে আবারও তাকে জেরা করা হবে। তিনি আমাদের জেরায় অনেক প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। তাকে আমরা জিজ্ঞাসা করেছিলাম আপনি কি বাদীনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। তিনি বললেন জিজ্ঞাসাবাদ করিনি।এত বড় একটা আলোচিত মামলায় বাদিনীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন নাই তাহলে বুঝা যায় এটা একটা বানানো মামলা। এতে প্রমাণিত হয় এটা একটা ভূয়া মামলা মিথ্যা মামলা। তিনি কারও কাছ থেকে তদন্ত করে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করতে পারে নাই। এটা একটা গোঁজামিলের তদন্ত।

আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে দুই দিন জেরা করেছেন। আরও এক দিন জেরা করার জন্য সময় চেয়েছেন। তাঁরা ইচ্ছে করেই সময়ক্ষেপণ করছেন। এখন পর্যন্ত যাঁরা সাক্ষী দিয়েছেন সকলেই বাদীর পক্ষে সাক্ষী দিয়েছেন।

এর আগে দীর্ঘ ৫ মাস পর মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে মামুনুল হককে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে পুনরায় তাঁকে প্রিজন ভ্যানে করে কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় আদালত পাড়ায় ভিড় লক্ষ্য করা যায়। 

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টের একটি রুমে কথিত স্ত্রীসহ হেফাজত নেতা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও মাদ্রাসার ছাত্ররা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে তাদের ছিনিয়ে নেন। ওই ঘটনার ১৫ দিন পর ওই বছরের ১৮ এপ্রিল মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ গ্রেফতার করে। এ ঘটনার ২৭ দিন পর ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে কথিত স্ত্রী বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। ২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলায় অভিযোগ গঠন করেন নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল।

Back to top button