নারায়ণগঞ্জ গডফাদারদের নিয়ন্ত্রণে ছিল, বললেন আসিফ নজরুল

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আমরা চাই, মানুষ যেন ছোটখাটো বিরোধ নিয়ে কোর্টে ছোটাছুটি না করে সহজেই ন্যায়বিচার পায়। এ উদ্দেশ্যে লিগ্যাল এইড ও ই-বেইলবন্ডসহ নানা সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। আমরা এমন একটি লিগ্যাল এইড ব্যবস্থা গড়ে তুলছি, যাতে সাধারণ মানুষকে অযথা আদালতের দ্বারে-দ্বারে না ঘুরতে হয়। বর্তমানে এসব কার্যক্রম পাইলট পর্যায়ে চলছে। আশা করছি, আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে সারা দেশে ই-বেইলবন্ড ও অনলাইন লিগ্যাল এইড চালু করতে পারব।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে ‘ই-বেইলবন্ড’ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আসিফ নজরুল দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, নিম্ন আদালতে সংস্কার হলেও যদি উচ্চ আদালতে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন না আসে তাহলে বিচারপ্রার্থীরা প্রকৃত সুফল পাবে না। যেমন- শিশু আছিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় নিম্ন আদালতে আমরা এক মাসে বিচার শেষ করতে পেরেছি। কিন্তু উচ্চ আদালতে সেই মামলার নিষ্পত্তি কবে হবে, তা বলা মুশকিল।
তিনি আরও বলেন, আমাদের উচ্চ আদালতের বিচারকরা মাঝে মাঝে নিম্ন আদালতে ইন্সপেকশনে যান। কিন্তু অনেক সময় সেটি আনন্দ ভ্রমণে পরিণত হয়। এই বাস্তবতা বদলাতে হবে।
নারায়ণগঞ্জের প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা বলেন, একসময় নারায়ণগঞ্জ গডফাদারদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। যেখানে ন্যায়বিচার পাওয়া ছিল অত্যন্ত কঠিন। আমরা সেই পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে চাই। ন্যায়বিচারের নতুন সূচনা আমরা নারায়ণগঞ্জ থেকেই শুরু করছি। আমরা চাই, নারায়ণগঞ্জ হোক নির্যাতনের জায়গা থেকে মুক্তির জায়গা।
সরকারি কর্মকর্তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া দ্রুত করার বিষয়ে তিনি বলেন, ডাক্তার, ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশসহ সরকারি কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য অনলাইনে নেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছি, যাতে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ, জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, আইনজীবী নেতা এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, এড. আব্দুল বারি ভূঁইয়া, আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড সরকার হুমায়ুন কবির, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধানসহ সমিতির নেতৃবৃন্দরা।