টাকা নিয়ে মেম্বার করার ‘গ্যারান্টি’ নির্বাচন কর্মকর্তার, অডিও ফাঁস
![](https://somoysokal.com/wp-content/uploads/2022/02/টাকা-নিয়ে-মেম্বার-করার-গ্যারান্টি-নির্বাচন-কর্মকর্তার-অডিও-ফাঁস-780x470.jpg)
সাড়ে চার লাখ টাকার বিনিময়ে এক ইউপি সদস্য প্রার্থীকে ভোটে জেতাতে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নানের গোপন চুক্তির একটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে। টাকা-পয়সা লেনদেনসহ প্রার্থীকে জেতাতে নানা পরিকল্পনার ওই অডিও ক্লিপটি কালের কণ্ঠের হাতে এসেছে।
সেই অডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভোটগ্রহণের চার দিন আগে প্রার্থী ও নির্বাচন কর্মকর্তার এমন গোপন চুক্তির অডিও ক্লিপ ঘিরে সর্বত্র তোলপাড় শুরু হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অডিও ক্লিপ সংযুক্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহাতাব উদ্দিন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি মিঠাপুকুর উপজেলার ১৭টি ইউপির ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে বালারহাট ইউপির সদস্য প্রার্থী রফিকুল ইসলামকে জিতিয়ে দেওয়ার জন্য সাড়ে চার লাখ টাকার চুক্তি করেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল হান্নান। রফিকুল বালারহাট ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ফুটবল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
অডিও ক্লিপের কথোপকথনে শোনা যায়, রফিকুল ইসলাম নামের ওই প্রার্থীকে জেতাতে ভোটকেন্দ্র থেকে প্রতিপক্ষের লোকজনকে বের করে দেওয়া এবং ভোটের আগেই অন্তত ৩০০ ব্যালট পেপার সরবরাহের বিনিময়ে টাকা চেয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তা।
এ সময় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওই ইউপি সদস্যকে বোঝান, যেহেতু নির্বাচন করতে গেলে প্রতিদিনই ১০ হাজার করে টাকা ব্যয় হবে, তাতে পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ হবে। তাতে নির্বাচিত হওয়ার কোনো গ্যারান্টিও নেই, তাই সেটি না করে তাঁর সঙ্গে পাঁচ লাখ টাকার চুক্তি করলে তিনি যেভাবেই হোক জিতিয়ে দেবেন। এ ক্ষেত্রে তিনি গ্যারান্টি হিসেবে জেতাতে না পারলে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
শুধু তা-ই নয়, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় তাঁকে জিতিয়ে দেওয়ার কথা জানান নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান।
অভিযুক্ত প্রার্থী রফিকুল ইসলাম টাকা লেনদেনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এলাকার একজন শিক্ষকের মাধ্যমে দুই দফায় নির্বাচন কর্মকর্তাকে সাড়ে চার লাখ টাকা প্রদান করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এসব শোনার সময় নেই। অডিও ক্লিপ নিয়ে নির্বাচন কমিশনারের কাছে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। ‘
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহাতাব উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নানকে প্রত্যাহার এবং তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দুপুরে আমরা ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপ সংযুক্ত করে একটি চিঠি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন সচিবালয়ে প্রেরণ করেছি। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন সচিবালয় থেকে আমরা সিদ্ধান্ত পাব। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ‘