অপরাধ

পাগলা এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায় তন্ময়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী থানায় অভিযোগ

পাগলা এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায় তন্ময়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী থানায় অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার (Somoysokal) নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের পাগলা এলাকায় অবস্থিত পাগল নাথ মন্দিরের সেবায়েত দাবী করা তন্ময়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। এবার মুসলিম সম্প্রদায়ের এক যুবককে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ উঠেছে তন্ময়ের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ঐ যুবক ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।

বুধবার (৫ অক্টোবর) রাতে পাগলা এলাকায় অবস্থিত পাগল নাথ মন্দিরে সামনেই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নেশা গ্রস্ত হয়ে ঐ যুবককে মারধর করে তন্ময়। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর আবারও পাগলা কামালপুর বৃন্দাবন মন্ডলের ছেলে প্রদীপের উপর হামলা চালিয়ে তার মাথা ফাটিয়ে দেয়। তবে এই বিষয়ে প্রদীপের সাথে কথা হলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নেতা বলেন, পগলা পাগল নাথ মন্দিরে সেবায়ত মারা যাওয়ার পর এখন পযন্ত মন্দিরে কোনো সেবায়েত নিয়োগ দেওয়া হইনি। কিন্তু চিন্ময় দাস মোহন্ত ও তার ভাই তন্ময় দাস মোহন্ত তারা জোরপূর্বক ভাবে মন্দিরের সেবায়ত দাবী করেন। এর বিষয়ে কেউ বাঁধা দিলেই তাদের উপর আক্রমণ করেন তারা। তাদের অত্যাচারে এখন পাগলা এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। এই মন্দিরের বিষয় নিয়ে একটি মামলাও চলছে। চিন্ময় দাস মোহন্ত ও তার ভাই তন্ময় দাস মোহন্ত কোনো হিন্দু নেতা বা এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মানে না। তাদের যা ইচ্ছে তা-ই করে। সার্বক্ষনিক মন্দিরে ভিতর থেকে মদের গন্ধ আসে কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারে না। এমনকি চিন্ময় ও তন্ময় প্রশাসনকেও তোয়াক্কা করে না। কয়েকদিন আগেও চিন্ময় দাস মোহন্ত ও তার ভাই তন্ময় দাস মোহন্ত ও তার সহযোগীরা  গভীর রাতে মন্দিরের সিসি  ক্যামেরা বন্ধ করিয়া প্রতিমা ভাঙ্গার পর বাহিরে নিয়ে ট্রলার দিয়ে নদীর মাঝখানে নিয়ে পানিতে ফেলে দেয়। সেই বিষয়েও ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অচিরেই এর একটা সমাধান হওয়া দরকার।

এদিকে তন্ময়ের আঘাতে আহত হওয়া ভুক্তভোগী ঐ যুবক বলেন, আমার সাথে পাগল নাথ মন্দিরে কারো সাথে কোনো সম্পর্ক নাই আমি গিয়েছিলাম মিষ্টি কিনতে। কিন্তু তন্ময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নেশা গ্রস্ত হয়ে এসে আমার উপর হামলা করে। আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার উপর হামলা চালায়।

তন্ময়ের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় দায়েরকৃত ভুক্তভোগী ঐ যুবকের অভিযোগ তুলে ধরা হলো, বিনীত নিবেদন এই যে, আমি মোঃ তাসিন (১৯), জাতীয় পরিচয় পত্র নং- ৮৭১৮৫৭০৫2৯,
পিতা- মৃত মােঃ শুক্কুর মােল্লা, সাং- দেলপাড়া চেয়ারম্যান বাড়ি রোড কবরস্থান সংলগ্ন , থানা- ফতুল্লা, জেলা- নারায়নগঞ্জ। থানায় হাজির হইয়া বিবাদী ১। তন্ময় দাশ মােহন্ত (২৮) পিতা- মৃত দেবু দাশ মােহন্ত, সাং- পাগলা কামালপুর ২। রুবেল (২৯) পিতা- খন্দকার মাষ্টার, সাং- পাগলা, উভয় থানা-
ফতুল্লা, জলা- নারায়নগঞ্জ সহ অজ্ঞাত নামা ৭/৮ জনদের বিরুদ্ধে এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করিতেছি যে, ইং ০৫/১০/২০২২ তারিখ রাত্র অনুমান ১০:৩০ ঘটিকার সময় আমি সহ আমার বন্ধু ছাব্বির,
সৌরভ, অনিক সরকার, আমিনুল হাসান মাহিম, সিহাব, মােঃ মাোকসেদুল গণ অত্র থানাধীন পাগলা
বাজার সংলগ্ন পাগলনাথ মিষ্ঠান্ন ভান্ডার এর সামনে গিয়া মিষ্টি ক্রয় করার সময় উত্ত বিবাদীদ্বয় সহ অজ্ঞাত নামা ৭/৮ জন উত্ত দোকানের সামনে আসিয়া মাতাল অবস্থায় বিনা কারণে আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করিয়া আমাদেরকে সেখান হইতে চলিয়া যাইতে বলে। তখন আমি ইহার কারণ জিজ্ঞাসা করিলে উক্ত ১নং বিবাদী তাহার নিকট থাকা দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখাইয়া অন্যান্য বিবাদীদের হুকুম দেয় যে, আমাদেরকে মারিয়া ফেলতে। উক্ত হুকুম পাইয়া উক্ত ২নং বিবাদী সহ অজ্ঞাত নামা বিবাদীরা আমাকে এলােপাতাড়ী ভাবে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে আমার বন্ধুরা আমাকে রক্ষা করিতে আগাইয়া আসিলে উক্ত ১নং বিবাদী তাহাদেরকে এলাপাতাড়ী ভাবে মারধর করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফোলা জখম করে এবং আমার নাকে স্বজোরে ঘুষি মারিয়া রক্তাক্ত জখম করে। আমরা চিৎকার দিলে উক্ত
১নং বিবাদী আমার শার্ট টান দিয়া ছিড়িয়া ফেলে এবং ২নং বিবাদী আমার গলায় থাকা ০৪ আনি ওজনের স্বর্ণের চেইন, মূল্য অনুমান- ২০,০০০/- টাকা সহ আমার প্যান্টের পকেটে থাকা ব্যবসায়ীক নগদ-২০.২০০/- টাকা জোর পূর্বক নিয়া নেয়। এক পর্যায়ে উক্ত নামা বিবাদীরা আমাকে সহ আমার
বন্ধুদেরকে এই মর্মে হুমকি ধামকি প্রদান করে যে, উক্ত বিষয় নিয়া কাহারও নিকট বিচার অথবা আইনের আশ্রয় গ্রহণ করিলে আমাকে সহ আমার বন্ধুদেরকে পরবর্তীতে পাইলে জীবনে শেষ করিয়া ফেলিবে। পরবর্তীতে খোজ খবর নিয়া জানতে পারি উল্লখিত বিবাদীদ্বয় এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপরাধ মূলক কর্মকান্ড করিয়া বেড়ায় এবং বিভিন্ন নিরহ লোকজনদেরক রাস্তা ঘাটে আটক করিয়া সব কিছু কাড়িয়া নেয়। পরবর্তীতে আমার বন্ধুরা আমাকে ধরাধরি করিয়া চিকিৎসার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল (ভিক্টোরিয়া) নিয়া যায়। ঘটনার বিষয়টি সবাইকে অবগত করিয়া থানায় আসিয়া অভিযোগ দায়ের করিতে বিলম্ব হই।

উপরোক্ত অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের দায়িত্বে থাকা ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান জানান, আমি ঘটনার দিন ঘটনার স্থলে গিয়েছি এই বিষয়ে তদন্ত চলছে তদন্ত অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Back to top button