‘আমি শামীম ওসমান, কারও দয়ায় চলি না’
মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যু ও ইভটিজিং মুক্ত সমাজ গড়ার আহ্বান জানিয়ে ডাকা সমাবেশে উপস্থিত হননি প্রশাসন ও পুলিশ। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলাবাহীনির কোন কর্মকর্তা উপস্থিত না থাকায় এমপি শামীম ওসমানকে অনেকেই এ ব্যাপারে প্রশ্ন করেন। এ কারণে তাঁদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ঝেড়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।
তিনি বলেন, আপনারা প্রশ্ন করেছেন, আমি জেলা প্রশাসককে বলেছি কিনা, আমি একবার বলি নাই, বারবার বলেছি। আপনারা জেনে অবাক হবেন, কেবিনেট সেক্রেটারি, প্রধানমন্ত্রীর সচিব, খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীগণ আমাকে এই উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন। সেই কারণে, ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্সিতে একটা সংসদ সদস্য কোন জায়গায় থাকে এইটা হয়তো নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনের অনেকেই বুঝতে পারেন নাই। নারায়ণগঞ্জে যারা আছেন, তাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে, আমার নাম শামীম ওসমান। আমি কারও দয়ায় চলি না কিন্তু। আমি কারও দয়া-দাক্ষিণ্যে চলার মতো লোক না। আমি রাজপথ থেকে সৃষ্টি হওয়া মানুষ আমি রাজপথেই শেষ হবো।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) ইসদাইর ওসমানী স্টেডিয়ামে দুপুরে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভাটির সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই।
প্রায় ১০ মিনিট বক্তৃতা করেন শামীম ওসমান। সমাবেশে উপস্থিত না থাকার ব্যাপারটি সংসদে উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইবেন বলে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনে যারা একজনকেও এইখানে আসতে দেন নাই বা আসেন নাই কেন, এই প্রশ্ন যদি এইখানে করি তাহলে ভাববেন নারায়ণগঞ্জে করেছি। আমি শামীম ওসমান সম্বন্ধে ধারণা আপনাদের অনেক কম। পার্লামেন্টের অধিবেশনে জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জিজ্ঞেস করবো, যারা জনগণের সেবক হিসেবে, জনগণের চাকরি করে এই নারায়ণগঞ্জে এসেছেন, তারা আজকে অনুপস্থিত কেন? আমি মাথা নোয়াবার মানুষ আমি না। এমন কোন কাজ করি না যে, আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করবো। অনেকেই অনেক কিছু করেন, আমরা সব দেখি। টাকা ধরা পড়ে যাত্রাবাড়িতে আর কেস দেখান ফতুল্লাতে। আমাদের কাছে অনেক খবরই আছে, সাংবাদিকরা আমাদের জানান কিন্তু।
সংসদ বলেন, রাত বারোটার সময়ও সাড়ে চার, পাঁচ লাখ লোক নামানোর ক্ষমতা শামীম ওসমান রাখে। তা আমরা দেখিয়েছি কয়েকদিন আগে। (লোকজন রাস্তায়) নামার পর যদি আমরা বলি, জনগণ যদি বলে, আমরা কাউকে এখানে চাই না, তাহলে কিন্তু এইখানে থাকার কারও উপায় নাই। এই কথাও মাথায় রাখবেন কিন্তু। আগের মেজাজ থাকলে এখনই বলে দিতাম। এখন বয়স হয়েছে ৬২, তাই ৬২ হিসেবে বক্তব্য দিলাম, ২৬ বানাইয়া দিয়েন না কিন্তু। সাবধান থাকবেন সবাই।
মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সভাপতি চন্দন শীল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল (ভিপি বাদল), মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, জি এম আরমান, বিকেএমইএ-এর নির্বাহী সভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি মোহাম্মদ হাতেম, ইয়ান মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সাধারণ সম্পাদ অ্যাড মহসীন মিয়া, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি তানভীর আহম্মেদ টিটু, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সালাম, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব সভাপতি আরিফ আলম দিপু, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন সহ বিভিন্ন শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদবৃন্দ।