‘ক্ষুধার্ত খাদক’ সিফাত দুর্ঘটনায় মারা গেলেন
শেষ ডিডিও তিনি দেন গত সপ্তাহে। শিরোনাম ছিল―বট ভাজা, গরুর কলিজা, ৯০ টাকায় আস্ত কোয়েল পাখির রোস্ট। তিনি আরো লেখেন : ক্ষুধার্ত খাদক চ্যানেলে আপনাদের স্বাগতম। আমি সিফাত রাব্বি।
আজ আমি আছি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ কমার্শিয়াল এরিয়াতে। সেখানে সারি সারি স্ট্রিট ফুড কার্ট থেকেই দুটো ফুড কার্ট ভ্যানের খাবার নিয়ে করেন ফুড ব্লগিং।
‘ক্ষুধার্ত খাদক’ নামে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৪ জানুয়ারি ভিডিওটি আপলোড করেন সিফাত। মাত্র ৯ দিনে এখন পর্যন্ত ভিডিওটি দেখে আট হাজার ৬৪৪ জন দর্শক। তবে সেসব এখন অতীত। এই চ্যানেলে আর ভিডিও দেবেন না সিফাত।
বন্ধ হয়নি তাঁর চ্যানেল। তবে বন্ধ হয়ে গেছে সিফাতের জীবনযাত্রা। গতকাল বুধবার রাতে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ওঠানো যন্ত্রের চাকার নিচে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়। সিফাত বন্দরের জুনিয়র আউটডোর অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বন্দর পরিবহন বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, রাতের শিফটে কাজ করার সময় সিফাত রাব্বি বন্দরের ২ নম্বর ইয়ার্ডে দাঁড়িয়ে কনটেইনার ওঠানামার কাজটি তদারক করছিলেন। এমন সময় কুয়াশার সাথে একটু অন্ধকারও ছিল। তদারকির সময় পেছন থেকে আরেকটি ক্রেন এসে তাঁকে চাপা দেয়। ক্রেনটি বন্দরেরই ছিল; চালকও বন্দরের। পরে বন্দরের নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্সে তাঁকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
কলেজিয়েট স্কুলের এই ছাত্র আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামে (আইআইইউসি) পড়ালেখা শেষ করে ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে চাকরিতে যোগ দেন। চার মাস আগে বিয়ে করে সিফাত চট্টগ্রাম বন্দরের হাই স্কুল কলোনিতে মা ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। আগামী ৭ জানুয়ারি তাঁর বৌভাত অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল বলে স্থানীয়রা জানায়।
চট্টগ্রাম বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহেদুল কবির বলেন, বন্দরের অভ্যন্তরে কাজ করার সময় কনটেইনার ওঠানো-নামানোর যন্ত্রের চাকার নিচে পড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। পরে মরদেহ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।