সারাদেশ

সিদ্ধিরগঞ্জে টেনশন ও ডেভিল এক্সো গ্রুপের ১৭ সদস্য আটক

সিদ্ধিরগঞ্জে ‘টেনশন গ্রুপ’ এবং ‘ডেভিল এক্সো গ্রুপ’ এর ১৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মিজমিজি এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়৷

গ্রেপ্তাররা হলো- নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রার্থী শফিকুল ইসলামের বড় ছেলে মিজমিজি এলাকার সক্রিয় কিশোর গ্যাং টেনশন গ্রুপের লিডার রাইসুল ইসলাম সীমান্ত (২২), তারই অপর আরেক ছেলে ডেবিল এক্সো গ্রুপের লিডার মো. সারিব (১৯), সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকার মো. তাজুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম (২৬), সানারপাড় এলাকার আ. রহমানের ছেলে মো. হুমায়ুন হোসেন (২৪), মিজমিজি নাদা পাড়া এলাকার মো: আমিন উদ্দিনের ছেলে মো. সাজ্জাদ হোসেন (২৬), নারায়ণগঞ্জের বন্ধরের লাঙ্গলবন্দ এলাকার খোকন শেখের ছেলে মো. রাব্বি (২৫), নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিল এলাকার বাসিন্দা মনিরুল ইসলামের ছেলে প্রিতম রোবায়েতি ইসফাক (২৯), মিজমিজি এলাকার হারুনের ছেলে মো. আশিক (১৯), দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. নাঈম (১৯), আজাদ শিকদারের ছেলে মো. তুহিন হোসেন (১৮), খন্দকার মোহাম্মদ নুরুল্লাহর ছেলে রোসমান (১৯), বাক্কির ছেলে মো. শাহাদৎ (১৯), তাজুল ইসলামের ছেলে মো. সৌরভ (২০), নুর নবীর ছেলে মো. মাহিন (২০), ইমান আলীর ছেলে মো. তুষার (২০), নবীর হোসেনের ছেলে মো. সৌরভ (১৯), আনোয়ার হোসেনের ছেলে মো. আরিফ (১৯)।

সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে র‌্যাব-১১ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-১১ এর উপ-পরিচালক মেজর সানরিয়া চৌধুরী। 

সংবাদ সম্মেলনে সানরিয়া চৌধুরী জানান, গত বছরের ৩১ আগস্ট, ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জে মধ্যরাতে পরিচিত কিশোর গ্যাং টেনশন গ্রুপের নেতা সীমান্ত ও তার বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন বসতবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এছাড়াও তাদের সক্রিয় এলাকায় উঠতি বয়সি ছাত্রদের টার্গেট করে মাদকদ্রব্য সেবনে প্ররোচিত করে তাদের গ্রুপে যোগদান করিয়ে এলাকায় বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের দেওয়া তথ্যের বরাতে ব়্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, রাইসুল ইসলাম সীমান্ত টেনশন গ্রুপের দলনেতা এবং মো. সারিব ডেভিল এক্সো গ্রুপের দলনেতা৷ গ্রেপ্তার আসামিরা রাস্তায় চলাচলরত জনগণের মালামাল ছিনতাই, বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, মালবাহী ও যাত্রীবাহী পরিবহণে নিয়মিতভাবে ছিনতাই ও চাঁদাবাজি করে থাকে। আসামিরা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পরিকল্পিতভাবে দলবদ্ধ হয়ে শক্তির মহড়া বা দাপট প্রদর্শন করে জনমনে ভয়ভীতি বা ত্রাস সৃষ্টি করে। এলাকাবাসী তাদের হিংস্রতা, অত্যাচার ও নির্যাতনের ভয়ে প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।

টেনশন গ্রুপের দলনেতা রাইসুল ইসলাম সীমান্ত ও সদস্য রোবায়েত ইসফাক প্রিতম এবং ডেভিল এক্সো গ্রুপের সদস্য মো. আশিক ও মো. নাঈম বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা ও ধর্ষণসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।

গ্রেপ্তার সীমান্ত সিদ্ধিরগঞ্জে থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শফিকুল ইসলামের ছেলে এবং প্রিতম জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবির ছেলে৷

এর আগে ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর রাতে রবির বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ৷ বাসায় রবিকে না পেয়ে তার ছেলে প্রিতমকে আটক করে নিয়ে যায়৷ পরদিন সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় বিস্ফোরক আইনে পুলিশের করা পুরোনো এক মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে প্রিতমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়৷

ব়্যাবের অভিযানে ছেলের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা মনিরুল ইসলাম রবি বলেন, ‘আমার ছেলে সারাদিন রোজা রেখে সন্ধ্যায় বন্ধুদের সাথে ইফতারের জন্য বের হয়৷ পরে শুনি ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ব়্যাব, তারা সবাই ইফতারের ওই আয়োজনে ছিল৷ আমার ছেলের তো কিশোর না, তাকে কীভাবে কিশোর গ্যাং-এর সদস্য বলা হচ্ছে?’

Back to top button