ডিমের দামে দিশেহারা মানুষ
এখনও ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে রয়েছে নারায়ণগঞ্জে ডিমের দাম। পূর্বে বাজারগুলোতে ডিমের (লাল) দাম ৪২ টাকা হালি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকায়। ফলে ভোক্তারা ডিম কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। এসব ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের তরফ থেকে কঠোর নির্দেশনা থাকলেও মানা হচ্ছেনা নারায়ণগঞ্জের বাজারগুলোতে। এছাড়া এ ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে নারায়ণগঞ্জ প্রশাসন কিংবা ভোক্তা অধিকারেরও তেমন কোন উদ্যোগ চোঁখে পড়েনি। ফলে ডিমের পাইকারি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ডিমের দাম রাখছেন নিজেদের ইচ্ছেমত। এসবের কারণে ভোক্তারা দিশেহারা হলেও বাড়তিই রয়েছে ডিমের দাম।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) শহরের দিগুবাবুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে ‘হালিম এন্টার প্রাইজ’ নামে একটি পাইকারি ডিমের দোকানে লাল ডিম হালি প্রতি ৫০ টাকা রাখা হচ্ছে। দোকানদারদের দাবি, ভোক্তারা বেছে যে ডিমটা নিচ্ছে শুধুমাত্র সেই ডিমের হালিই ৫০ টাকা রাখা হচ্ছে। আর বেছে না নিয়ে হালি প্রতি দাম রাখা হচ্ছে ৪৮ টাকা। তবে তাদের এ বক্তব্যের সাথে বাস্তবতার কোন মিল খোঁজে পাওয়া যায়নি। এদিকে এই দোকানের আশে পাশের আরও তিন চারটি পাইকারি ডিমের দোকানে একই দাম হাকা হচ্ছে। অথচ সরকার এ ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ১২ টাকা পিছ তথা ৪৮ টাকা হালি।
ডিম কিনতে আসা সেলিম বলেন, এ দেশে একবার যে জিনিষের দাম বাড়ে, সেই জিনিষের আর কোন দিন দাম কমেনা। এটাই এদেশের সংস্কৃতি। মাত্র কিছুদিন আগে যে ডিম আমরা ৩৮-৪২ টাকা হালি দরে কিনেছি, সেই ডিমের দাম এখন ৫০ টাকা। ডিম আনা-নেয়ার পরিবহন ভাড়া থেকে শুরু করে সব কিছুই আগের মতই আছে, তাহলে তারা কি কারণে ডিমের দাম বৃদ্ধি করবে? তারা এটা অতিরিক্ত লাভ করছে। প্রশাসনের তদারকি না থাকার কারণে তারা এখানে যা ইচ্ছে তাই করছে। আর আমরা অসহায়ের মত সব সহ্য করে চলছি।
মধ্যবয়সি সুমন নামে আরেক ক্রেতা বলেন, কি বলবো ভাই? দেশের কি যে অবস্থা, বলে বুঝাতে পারবো না। আমার একার উপর সংসারটা। ছোটখাটো একটা চাকুরি করি। এটা দিয়ে টেনেটুনে কোন মতে সংসারটা চালাতাম। মাছ-মাংসতো ছেলে-মেয়েদের ঠিকঠাক মত খাওয়াতে পারিনা। এই ডিমই ছিলো শেষ ভরসা। এখন এই ডিমের দামও চওড়া। কোথায় যাবো ভাই, বলেন? তারা (দোকানদার) নিজেদের ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে রাখে। কেউ কিছু বলেনা। মনেহচ্ছে, এ নারায়ণগঞ্জের মা-বাপ নাই। এভাবে চলতে থাকলে ছেলে-মেয়ে নিয়ে শুধু আমিই নয়, অনেক মানুষই না খেয়ে মারা যাবে।
এদিকে এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ জেলার পরিচালক সেলিমুজ্জামানকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি। ফলে এ বিষয়ে তার কোন বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।