বাংলাদেশ রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস রক্ষা করতে কঠোর পরিশ্রম করলেন না’গঞ্জ পিবিআই চোর চক্র গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার (Somoysokal) বাংলাদেশের বাংলাদেশ রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস ব্যবসায়িদের রক্ষা করতে এবং দেশের সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখতে নারায়ণগঞ্জ জেলা পিবিআই কঠোর পরিশ্রম করে একটি চোর চক্র গ্রেফতার করেছেন। এর রহস্য উদঘাটন করতে ও চোর চক্রকে গ্রেফতার করতে একটানা ১০ দিন নিখুঁত অভিযান চালিয়ে সাফল্য পেয়েছেন।
রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস পণ্য বিদেশে শীপমেন্টের পথে একটি চক্র পথিমধ্যে কাভার্ডভ্যান থেকে পণ্যের কার্টুন খুলে কিছু মাল সড়িয়ে রাখত। এতে রেডিমেট পণ্যটি বিদেশে রপ্তানির পর বায়ার মালামাল কম পেলে পুরো পেমেন্ট দিতে ও ভবিষ্যতে মালামাল নিতে অস্বীকৃতি জানাত। যা দেশের গার্মেন্টস শিল্পের জন্য চরম ক্ষতিকর। এমন এক চোর চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গত ৩১ মার্চ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ১১ দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এই চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। উদ্ধার করেছে বিপুল পরিমাণ চোরাই পণ্য।
গ্রেফতারকৃতরা হলো: চোরাই চক্রের মূলহোতা মিজানুর রহমান সোহেল (৪০) সমন্বয়কারী সাইফুল ইসলাম রায়হান (৩২), চোরাই মালের বিক্রেতা তৌহিদুল ইসলাম কাউসার (৪২), চোরাই চক্রের দালাল মোতালিব হোসেন বাবু (৪৮), চোরাইকাজে ব্যবহৃত ট্রাকের মালিক ফারুক হোসেন (২৮), গোডাউনের বিল্লাল হোসেন (৩৪) এবং ট্রাকচালক মো. পারভেজ (৩০)। গ্রেফতারকৃত প্রত্যেক আসামির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
১০ এপ্রিল দুপুরে সাইনবোর্ডে নিজ কার্যালয়ে পিবিআইয়ের জেলা পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পোশাক মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিকেএমইএ’র পরিচালক মোরশেদ সারোয়ার সোহেলসহ পিবিআই এর পুলিশ কর্মকর্তারা।
গ্রেফতারকৃত চোর চক্রের সদস্য সম্পর্কে পিবিআই জানায়, গত বছরের ৫ মে ফতুল্লার বিসিক এলাকার ফেইম অ্যাপারেলস লিমিটেডের তৈরি পোশাক শিপমেন্টের জন্য পাঠালে সেখান থেকে ৩০ হাজার ৫৪৩ পিস চুরি হয়। বিদেশি ক্রেতার মাধ্যমে এই তথ্য জানতে পেরে থানায় মামলা করে কারখানা মালিকপক্ষ। মামলাটি গত ১৩ ফেব্রæয়ারি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সহায়তায় গত ১১ দিন নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মিরপুর, সাভার, সীতাকুন্ড, ফটিকছড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চোরাই চক্রের মূলহোতাসহ সাতজনকে গ্রেফতার করে তদন্তকারী সংস্থাটি।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পিবিআই জানায়, চোরচক্রের মূলহোতা সোহেলের নির্দেশ ও অর্থায়নে আসামি রায়হান চক্রের সমন্বয়কারী হিসেবে ভূমিকা পালন করে। কাভার্ডভ্যান চালককে আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে সিল ট্যাগ অক্ষত রেখে শিপমেন্টের এক-তৃতীয়াংশ পণ্য চুরি করে। চুরি করা পণ্যের জায়গায় ঝুট ঢুকিয়ে দেওয়ায় শিপমেন্টের সময় ওজন ঠিক থাকে বলে ধরা পড়ে না। পরে চোরাই পণ্য কিছুদিন গোডাউনে রাখা হয়। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ, ঢাকার ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টার, মাতুয়াইলে এই ধরনের একাধিক গোডাউনের সন্ধান পেয়েছে পিবিআই। পরে এইসব চোরাই পণ্য বিমানের মাধ্যমে দেশের বাইরে মালেশিয়ার পেনাং, হাংকুয়া ও কুয়ালালামপুরে পাঠানোর ব্যবস্থা করে এই চক্রের মূলহোতা সোহেল।
পিবিআই পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, গত ৮ এপ্রিল মিরপুরের গোডাউনে অভিযান চালিয়ে মালামালের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রবিহীন বিপুল পরিমান রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস পণ্য উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় পল্লবী থানায় একটি নিয়মিত মামলা করে পিবিআই।
এদিকে রপ্তানিমুখী পোশাক চোর চক্রের মূল হোতা মিজানুর রহমান সোহেল (৪০) কে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালত রিমান্ড না মজুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।