আজও নেই আইভী
নারায়ণগঞ্জে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের আগমনে কোনও অনুষ্ঠানে দেখা যাচ্ছে না নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীকে। শামীম ওসমানের ডাকা সমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসলেও উপস্থিত হননি আইভী। গত ১৩ অক্টোবর কাঁচপুরে শান্তি সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ একঝাক কেন্দ্রীয় নেতা আসলেও উপস্থিত ছিলেন না আইভী। আজ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় আসেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। এসময়ও উপস্থিত ছিলেন না সেলিনা হায়াত আইভী।
আগামী ৪ নভেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সার্কিট হাউজে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বর্ধিত সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। অনাড়ম্বর এই বর্ধিত সভা চলে প্রায় ৫ ঘণ্টা।
বিশেষ এই বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। বেশ কয়েকবার প্রভাবশালী এ সাংসদ আইভীকে সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামার আহ্বান জানান। একইসাথে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে নামতে মেয়র আইভীকে গত ৮ আগস্ট মুঠো ফোনে একটি বার্তা পাঠান শামীম ওসমান। তবে শামীম ওসমানের দাবি, তার ওই ক্ষুদেবার্তাটির সাড়া এখনো পাননি তিনি।
এবার সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সেই ক্ষুদেবার্তাটি কেন্দ্রীয় নেতা আজমসহ স্থানীয় নেতা ও নারায়ণগঞ্জের এমপি মন্ত্রীদেরসামনে সেই বার্তাটি পড়ে শোনান শামীম ওসমান।
শামীম ওসমান বলেন, আমার বাবা মা ভাইয়ার কবরগুলো শ্মশানের মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়ার বিষয়ে, আমি প্রকাশ্যে মিডিয়ায় বলেছি। তুমি হয়ত জানো না, সেখানে আমি তোমাকে দায়ী করিনি। আমি আশা করেছিলাম এ ব্যাপারে তুমি তদন্ত কমিটি করে দোষীদের বিচার করবে। যাই হোক, আল্লাহ বিচার করবে। আমি তোমাকে কয়েকটি বিষয়ে কিছু কথা বলব। প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমি আপার নির্দেশমত নির্বাচন করেছি। নির্বাচনের দিন আমার চোখের সামনেই যা ঘটার ঘটেছিল। তখন তত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু ছিল। আমাকে বলা হয়েছিল তৈমূর বসে গেলে তোমাকেও সরে যেতে হবে, নির্বাচন ছেড়ে দিতে হবে। আমি কথা রেখেছিলাম। নির্বাচনের পরে একারণেই বলেছিলাম হেরেছি আমি, জিতেছেন শেখ হাসিনা। প্রমান করেছে সেনাবাহিনী ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। এগুলো লিখেছি ওকে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় নির্বাচন নিয়ে আর বললাম না। তরপর বললাম আইভি তুমিও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ভালবাসো। সামনে আমাদের কঠিন লড়াই। এটা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। নির্বাচন পর্যন্ত বাঁচবো কীনা জানি না। করবো কীনা তাও জানি না। এখন একমাত্র চিন্তা দেশটাকে বাঁচানোর। আসো আমরা এক সাথে মাঠে নামি। জামাত বিএনপি ও তথাকথিত সুশিল, যারা দেশটাকে ধ্বংস করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি। তাহলে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের পুরোনো ঐতিহ্য আবারো ফিরে আসবে। সবচেয়ে বড় কথা আপা অনেক খুশি হবেন। আমরা যদি একসাথে মাঠে নামি, তাহলে আমাদের দেখাদেখি সারা দেশে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরিন সংকট নিরসন হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইয়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদলের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।
সভায় অংশগ্রহণ করেন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জি এম আরমান, সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল ইসলাম ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক কায়সার হাসনাত, সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুম, মোশাররফ হোসেনসহ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।