রাজনীতি

শামীম ওসমান কাপুরুষ, কর্মীদের রেখে পালিয়েছে : গিয়াসউদ্দিন

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দন বলেছেন, আমাদের দেশে অন্যায় ভাবে যে মানুষ অর্থ-বিত্ত উপার্জন করে, আমাদের দেশের মানুষ তাদের সম্মান করে। আর কেউ যদি সৎ ভাবে চলে আর গরিব হয়, তাহলে তাকে অবজ্ঞা করে। সমাজের ভালো মানুষদের সম্মান করতে হবে, অসৎ মানুষকে ঘৃণা করতে হবে। মসজিদ আল্লাহর ঘর, আপনারা সবাই মন খুলে এই মসজিদ উন্নয়নের জন্য সাহায্য করবেন। মসজিদ উন্নয়নের জন্য বন্ধুদের কাছ থেকে চেয়ে আনবেন, এতে অসম্মানিত হওয়ার কিছু নাই। বরং এটা সম্মানের কাজ। আমি আমার সামর্থ অনুযায়ী এই মসজিদ উন্নয়নের জন্য সাহায্য করবো।

শনিবার (৩১ আগস্ট) সকালে সিদ্বিরগঞ্জ ৫নং ওয়ার্ডের কলাবাগ জামে মসজিদের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এইসব কথা বলেন। এসময় স্থানীয় এলাকবাসী ও সিদ্ধিরগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

গিয়াসউদ্দিন বলেন, গত ১৫ বছর এলাকাই থাকতে পারি নাই। স্বৈরাচার সরকারের আমলে আমার নামে, আমার পরিবারের নামে এবং আমার সহকর্মীদের নামে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা তারা দিয়েছে। ওই সরকার থাকতে পারলে কয়েকটি মামলায় আমাদের ফাঁসির রায় হতো। মহান আল্লাহ আমাকে দুই মুক্তিযুদ্ধেই অংশ নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে। আমি জানি সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার অধিকাংশ মানুষ ভালো। কিছু কুলাঙ্গার সৃষ্টি হয়েছিলো, যারা সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতো। এই এলাকার অর্থ-সম্পদ লুন্ঠন করার জন্য তারা পাগল হয়ে গিয়েছিলো। নারায়ণগঞ্জের সর্বশ্রেষ্ট গডফাদার শামীম ওসমানের ক্যাডার বাহিনী হয়ে এই এলাকায় ত্রাসের রাজত্য তৈরি করেছিলো। এতে করে আমার এলাকার মান ইজ্জত সম্মান নষ্ট হয়েছে। যারা এগুলো করেছে অব্যশ্যই তাদের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। তাদের বিচারের জন্য আইনকে নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো থেমে নেই, সেই দিকে আপনাদের সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। ওই সন্ত্রাসীরা যাতে আর এলাকায় আসতে না পারে। সিদ্ধিরগঞ্জের সবাই শান্তি প্রিয় মানুষ। দুই-একটা কুলাঙ্গারের জন্য আমরা এই এলাকার সুনাম নষ্ট করতে পারি না। কুলাঙ্গাররা অবৈধ ভাবে অর্থ-বিত্ত তৈরি করেছে। এমনকি এই কুলাঙ্গাররা এই এলাকার ন্যায় বিচার ধ্বংশ করে দিয়েছে। তারা অন্যায় ভাবে অর্থের মাধ্যমে পক্ষপাতিত্ব করে বিচার করতো। শামীম ওসমানের ক্যাডার বাহিনী এই এলাকাকে এমন ভাবে জিম্মি করে রেখেছিলো, যে মানুষ কখনো প্রতিবাদ করতে পারেনি। আপনারা লক্ষ্য রাখবেন কেউ যাতে কোথাও কোন চাঁদাবাজি করতে না পারে। সম্পুর্ণ চাঁদাবাজ মুক্ত এলাকা থাকবে নারায়ণগঞ্জ। কেউ চাঁদাবাজি করলে আপনারা ব্যবস্থা নিবেন, না পারলে আমাদের বলবেন; আমরা তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নিবো। কিন্তু আর কোন সন্তানকে কুলাঙ্গার হতে দেওয়া যাবে না।

সাবেক এমপি শামীম ওসমানের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, হোন্ডার বহর নিয়ে তারা এই এলাকায় ভিতির সৃষ্টি করেছে। আজ কোথায় তারা। তাই ক্ষমতা থাকলেই ক্ষমতা দেখাতে নাই। অন্যায় করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে যখন শাস্তি এসে গেছে, আজ তারা পলাতক। তাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে রেখে পলায় গেছে। আমি আগেও সব জায়গায় বলতাম, সর্বশ্রেষ্ট গডফাদার শামীম ওসমান কিন্তু ও একটা কাপুরুষ। ২০০১ সালের নির্বাচনে সে আমার সাথে বিপুল পরিমানে ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলো, আপনারাই আমাকে জয়ী করেছিলেন। বোরকা পরে সে দেশ ত্যাগ করেছিলো। সেই দিনও সে তার কর্মীদের কথা ভাবেনি। এবারও বহু হুংকার দিয়েছে। তখন কেউ কেউ উত্তর দিতে ভয় পেতো, আমি শুধু আল্লাহকে ভয় পেতাম। আমি তখন বলেছি, ও একটা কাপুরুষ, ওকে ভয় পাবেন না। সে তো আবারো পালায় গেছে, কিন্তু সাঙ্গ পাঙ্গদের কথা তো একবারও ভাবলো না।

তিনি আরও বলেন, আপনাদের পক্ষে আমি সারা নারায়ণগঞ্জে প্রতিনিধিত্ব করি। বিএনপি একটি সর্ববৃহত্ত রাজনৈতিক দল। আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপির ভুমিকা কি, আপনারা সব জানেন। এই ১৫ বছরের মধ্যে অধিক সময় আমি আমার বাড়িতে থাকতে পারি নাই। আমি আপনাদের বলবো, যাদের সন্তান কুলাঙ্গার হয়ে গিয়েছিলো; তাদের সন্তানরা যাতে অনুতপ্ত হয়ে তওবা করে ওই পথ থেকে ফিরে আসে।

 

Back to top button