ফতুল্লা থানা বিএনপিতে গিয়াসবিরোধী শক্তিশালী বলয়
ফতুল্লা থানা বিএনপিতে গিয়াসবিরোধী শক্তিশালী বলয়
স্টাফ রিপোর্টার (Somoysokal) নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা থানা বিএনপির রাজনীতিতে কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে এটা সবারই জানা। তবে জেলা বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বিরোধী বলয় ধিরে ধিরে বড় হচ্ছে। ফতুল্লা থানা বিএনপির একটি পক্ষকে গিয়াসউদ্দিন নেতৃত্ব দিলেও শক্তিশালী বলয় তার বিরোধীতা করছে। গিয়াসউদ্দিন বিরোধী বলয় এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু ও সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী। তারা দুজনেই রাজপথ থেকে উঠে আসা কর্মীবান্ধব নেতা। শহিদুল ইসলাম টিটু জেলা যুবদলের সাবেক সফল সভাপতি, তার আমলে গঠিত বিভিন্ন থানা ও উপজেলায় যুবদলের কমিটি এখনো বহাল আছে। তাছাড়া টিটু জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। অন্যদিকে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী ফতুল্লা থানা ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সফল সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছে। টিটু ও রিয়াদ মিলে যে বলয়টাকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই বলয়টা বর্তমানে ফতুল্লা থানা বিএনপির রাজনীতিতে শক্তিশালী এবং সক্রিয় অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে গিয়াসউদ্দিন বলয়ে যারা রয়েছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই বিগত দিনগুলোতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার সময় গিয়াস ছিলেন কারাগারে । কারাগার থেকে বের হয়ে তিনি আর বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হোন’নি কখনো রাজপথেও দেখা যায়নি। গত নির্বাচনের পূর্বে জেলা কমিটিতে তাকে নেতৃত্ব দেয়া হয়। এর পরেই তিনি তার ঐসময়ের নিষ্ক্রিয় নেতাদের পদ পদবি দিয়ে সক্রিয় করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বিগত দিন গুলোর মধ্যে ফতুল্লা থানা বিএনপির রাজনীতিতে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য শিল্পপতি শাহাআলম নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি আবার বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হতে পারেন। শাহআলম এর বলয়টা মাঠে সক্রিয় আছে এখনো তবে বিভিন্ন গ্রুপে ঢুকে পড়েছে। এদিকে ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক জাহিদ হাসান রোজেল বর্তমানে চুপচাপ রয়েছেন তবে তার বলয়টা গিয়াস বিরোধী। বিগত সময়গুলোতে রাজপথে নেতৃত্ব দিয়ে নেতাকর্মীদের আগলে রেখেছে তাদের সবারই একটা নিজস্ব বলয় রয়েছে। এদিকে ২০০৯ থেকে মাঠে না-থাকায় গিয়াস কোনো বলয় তৈরি করতে পারেনি তাই তিনি মাঠের ত্যাগি নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে বয়স্ক নিষ্ক্রিয় নেতাদের পদ-পদবি দিয়েছেন। যার কারণে ফতুল্লা থানা বিএনপির রাজনীতিতে গিয়াস এর বলয় টা দূর্বল।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে গিয়াস উদ্দিন বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন তবে মনোনয়ন পাওয়া টা কঠিন হয়ে পড়বে। ইতিমধ্যে ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবে। রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী’র সাথে থানা বিএনপির সক্রিয় অনেক নেতা রয়েছে। এমনও হতে পারে ফতুল্লার টিটু-রিয়াদ আর সিদ্ধিরগঞ্জের মামুন মাহমুদ একজোট হয়ে মনোনয়ন নিয়ে আসতে পারে। তাছাড়া শিল্পপতি শাহাআলম যদি আবার রাজনীতিতে ফিরে তাহলে টিটু-রিয়াদের বলয়টা আরো শক্তিশালী হয়ে যেতে পারে।
২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে ছিলেন গিয়াসউদ্দীন। নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে মনােনয়ন পান সফর আলী ভুইয়া কিন্তু নির্বাচনের মাত্র ২১ দিন পূর্বে বিএনপিতে যোগদান করেন গিয়াস। পরে সফর আলীর মনােনয়ন বাতিল করে গিয়াসউদ্দীনকে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনিত করে বিএনপি।শামীম ওসমানকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হােন তিনি। বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তার সাথে ফতুল্লাঞ্চলের বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাথে দূরুত্ব বাড়তে থাকে। সে সময় থেকে ফতুল্লা এলাকায় নিজস্ব প্রভাব বিস্তার লাভ করার জন্য বিএনপির বহু নেতা-কমী কে মিথ্যে মামলা দিয়েছেন বলে অভিযােগ রয়েছে। সেই পুরােনাে দন্ধই গিয়াসউদ্দিনের কাল হয়ে দাড়াতে পারে।