স্টাফ রিপোর্টার (Somoysokal) স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা আওয়ামী সরকারের আমলে কখনো সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের কাছের আত্মীয় আবার কখনো প্রধানমন্ত্রী’র কার্যালয়ের মসজিদের ঈমাম পরিচয়ে সবসময় এলাকাবাসীকে হুমকি দিয়ে আতংকে রাখতেন আসাদুল ইসলাম আসাদ। আসাদুল ইসলাম আসাদ নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও উপজেলার বারদী ইউনিয়নের মছলন্দপুর এলাকার মৃত ইব্রাহিম মোল্লা’র ছেলে। আসাদুল ইসলাম আসাদ নিজেকে ব্যবসায়ি দাবি করলেও এলাকার কেউ নির্দিষ্টভাবে বলতে পারেনা সে কি করে। বারদী ইউনিয়নের মছলন্দপুর এলাকার প্রায় প্রতিটি পরিবার আসাদের দ্বারা নির্যাতিত। কিছু থেকে কিছু হলেই মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। অনেকে আবার তাকে সোনারগাঁওয়ের মিনি এস আলম নামেও চিনেন। সে নাকি বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের মাফিয়া এস আলম গ্রুপের মতোই বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ঋণ খেলাপী করতেন।
সোনারগাঁওয়ের মিনি এস আলম খ্যাত আসাদের দ্বারা নির্যাতিত এক ভুক্তভোগী নুরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আসাদুল ইসলাম আসাদ ২০১৩ সালে আমার কাছ থেকে একটা জমি ক্রয় করার জন্য কিছু টাকা দিয়ে বায়না করেছিলো কিন্তু সে আর ঐ জমিটা নেয়নি, আমি টাকা ফেরত দিতে চাইলে টাকাও নেয়নি পরবর্তীতে সে আমার নামে আদালতে মামলা করে। পরে তার বিষয়ে আমি খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি সে আমাকে হয়রানি করার জন্য মামলা দিয়েছে সে আমার কাছ থেকে টাকাও নিবে না, জমিও নিবেনা মূলত আসাদ আমাকে মামলা দিয়ে হয়রানি করবে এটাই তার উদ্দেশ্য । এইতো কিছুদিন আগে গত ১১ই নভেম্বর সেই মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে আসার সময় আদালত প্রাঙ্গণে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়। আমি প্রতিবাদ করিলে উক্ত আসাদ, তার ভাই শহিদুল্লা ও তাদের লোকজন আমার নাকে মুখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল, ঘুশি লাথি মারে। আমার ছেলে আমাকে রক্ষা করতে আসলে আমার ছেলে ও আমাকে সুযোগ পাইলে খুন করে লাশ গুম করে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে নিরাপত্তার জন্য ১১/১১/ ২০২৪ ইং তারিখে ফতুল্লা মডেল থানায় আসাদুল ইসলাম আসাদের নামে একটা সাধারণ ডায়েরি করি যার নং-৮১৫।
আসাদুল ইসলাম আসাদের বিষয়ে তার নিজ গ্রাম সোনারগাঁও বারদী মছলন্দপুরে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, আসাদ একজন প্রতারক কিসিমে’র লোক। সে নিজেকে খকনো সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের কাছের আত্মীয় আবার কখনো প্রধানমন্ত্রী’র কার্যালয়ের মসজিদের ঈমাম পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে। তার বিষয়ে কেউ কিছু বললেই মামলার হুমকি দেয় আর প্রভাবশালীদের নাম নিয়ে হুমকি দেয় যার জন্য ভয়ে কেউ অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারতো না। আসাদ মূলত অপকর্ম করে যত সই সম্পত্তি গড়ে তুলেছেন এগুলো সব তার ভাই শহিদুল্লার নামে গড়ে তুলেছেন যাতে করে আইনের চোখে ফাঁকি দেওয়া যায়।
বারদী মছলন্দপুর এলাকার একজন বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকে বলেন, আসাদুল ইসলাম আসাদ নিজেকে ব্যবসায়ী পরিচয় দিলেও মূলত সে একজন ব্যাংকিং সেক্টরের মাফিয়া। বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের মাফিয়া এস আলম গ্রুপের মতোই বিভিন্ন ব্যাংক থেকে আল আসাদ এগ্রো প্রোডাক্টের নামে লোন নিয়ে কয়েকমাস লোন চালিয়ে লস প্রজেক্ট বলে আর লোন চালাতো না এভাবেই বিভিন্ন ব্যাংকের টাকা মেরে দিতো। তবে এই বিষয়ে কোনো ব্যাংক ব্যবস্থা নিতে গেলে সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহানের প্রভাব খাটিয়ে মিটমাট করে নিতো। ২০১৪ সালে আসাদুল ইসলাম আসাদের নামে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় “সোনারগাঁয়ে সোনালী ব্যাংক ‘ছোট হলমার্ক” শিরোনামে নিউজ হয়েছিলো। ঐ সময়ে নিউজ টা নিয়ে সোনারগাঁওয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছিলো পরবর্তীতে কিছুদিন অপকর্ম থেকে বিরত থেকে আমার শুরু করে। ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে সে সরকারের কয়েকজন নীতিনির্ধারকের নাম ব্যবহার করতেন। ব্যাংকের কাগজপত্রে ‘ তার নামে প্রতিষ্ঠানগুলো বহাল ও সচল দেখাতেন। তবে বাস্তবে এগুলো ছিলো অস্তিত্বহীন।