লটারি-সার্কাস চালিয়ে বড় বড় কথা বলে : সাজনু
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজামকে ইঙ্গিত করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া বলেন, কিছুদিন আগে আপনারা সার্কাসম্যান দেখেছেন৷ নারায়ণগঞ্জের বিশ্বরোডের (লিংক রোড) পাশে লটারি ও সার্কাস চালিয়ে আমাদের দলের ক্ষতি ও যুব সমাজকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল তারা৷ আমাদের যুব সমাজকে ধ্বংস করে তারা আবার বড় বড় কথা বলে৷ আমি তাদের ধিক্কার জানাই৷ আপনারা দেখেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য (সেলিম ওসমান) সেই সার্কাস বন্ধ করে দিয়েছে। যারা লটারি চালায়, সার্কাস চালায় তারাই আবার আজকে বড় বড় কথা বলে। আমার এসব নিয়ে কথা বলতে লজ্জা লাগে৷
শনিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে ফতুল্লার পাগলায় গোলাম সারোয়ার মানব কল্যাণ ট্রাস্টের ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে শাহ নিজামের নাম উল্লেখ না করে তিনি এসব কথা বলেন।
সাজনু বলেন, গত কিছুদিন যাবৎ দেখতে পাচ্ছি, ফেসবুকে একজন মানুষ একটি উক্তি করেছে৷ উনি দেখলাম কিছু গীবত করলেন৷ কিছু উত্তর আমি দিতে চাই৷ যারা গীবত করে তারা আপন ভাইয়ের গোশত খায়। সেই ব্যক্তি ফজর নামাজ পড়ে মানুষের জন্য দোয়া করার কথা বলেছে৷ দোয়া করা ভালো কথা, কিন্তু তারপর তিনি কাউকে উদ্দেশ্য করে গীবত করলেন। তিনি জানেন না একজন মানুষ গীবত করলে আপন ভাইয়ের গোশত খায়। এটা জানলে সে গীবত করতো না। আমি নির্বাচন করবো, উনিও নির্বাচন করবে, এটা গণতান্ত্রিক অধিকার, সেখানে আপত্তি নেই। কিন্তু কারও চরিত্রহরণ করার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, তিনি টেন্ডারবাজির কথা বলেছে। আমার মনে আছে, ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ টানা (দ্বিতীয়বার) ক্ষমতায় আসার পর নারায়ণগঞ্জ জেলার কিছু টেন্ডার ছিল। সেই টেন্ডার তিনি কন্ট্রোল করতে গিয়েছিল। আমি যখন শিডিউল কিনেছি তখন আমাকে বলা হলো, এটা (টেন্ডার) আমরা কন্ট্রোল করছি, তুমি টেন্ডার জমা দিও না, আগামীকাল সিদ্ধান্ত দেবো৷ আমি তাদের কথা শুনে চলে গিয়েছিলাম৷ তারপর জিজ্ঞেস করলাম আমি কী টেন্ডার ড্রপ করবো? তিনি তখন বললেন ড্রপ করো। এরপর আমাদেরই এলাকার এক এমপি যিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তার কাছে ওই ব্যক্তি তদবির করেছিল টেন্ডার কন্ট্রোলের জন্য। কিন্তু এমপির ধমক খেয়ে সেদিন সে টেন্ডারবাজি করতে পারেনি। সুযোগের অভাবে সৎ থাকলে কাউকে সৎ বলা যায় না, সুযোগ পেয়েও যদি কেউ সৎ থাকে তাহলে সেটাই প্রকৃত সততা। যে ব্যক্তি বক্তব্য দিয়েছে সে সুযোগের অভাবে সততা দেখিয়েছে।
সাজনু আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিভিন্ন জায়গায় ওই ব্যক্তি ভূমিদস্যুতা করেছে। আমি জ্বলন্ত উদাহরণ দিবো। গ্রীন সিটি নামের একটি হাউজিং আছে। সেখানে আমার পরিচিত একজন লোক যে অস্ট্রেলিয়া থাকে, তার ২০ শতাংশ জায়গা ভরাট করে ফেলেছে, সেটা দখল করতে চায়। নির্বাচনী বিজয়ী হবার পর শামীম ওসমান মাদক, সন্ত্রাস ভূমিদস্যুতা বন্ধ করতে প্রত্যাশা নামে সংগঠন করেছেন৷ আজ মানুষ প্রত্যাশার কারণে প্রত্যাশা করে মাদক, ভূমিদস্যুতা মুক্ত একটি সমাজ গড়ার জন্য। কিন্তু দেখা যায় মানুষের জমিতে সাইনবোর্ড বসিয়ে দেওয়া হয়। টাকা দিলে সাইনবোর্ড তুলবে, নইলে তুলবে না। সেই ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে শামীম ওসমান প্রত্যাশা গড়েছে৷আল্লাহ আমাদের তৌফিক দিলে আর শামীম ওসমান তার মনটা নরম করে আমাকে এই উপজেলার জন্য মনোনীত করলে যারা ভূমিদস্যুতা করে যারা সার্কাস চালায় তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে এই নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলাকে ডিজিটাল উপজেলা করবো৷ একটি সুন্দর উপজেলা হিসেবে এটিকে গড়ে তুলবো। সার্কাসমুক্ত নারায়ণগঞ্জ গড়ে তুলবো৷
কুতুবপুর ইউপির সাবেক মেম্বার আলাউদ্দিন হাওলাদারের সভাপতিত্বে ঈদসামগ্রী বিতরণের ওই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কুতুবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর খালেক, মহিলা আওয়াী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিউটি বেগম, ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. বি এম আনোয়ার ও জেলা যুবলীগের সদস্য এম ও এফ খোকন প্রমুখ।