সারাদেশ

রাক্ষস থেকে মহানগর বিএনপি অবমুক্তির দাবি কাউন্সিলর দিনার

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খাঁন টিপুর বেপরোয়া আচরণ ও বিতর্কমূলক কর্মকান্ডে চুপ নেই বিএনপির নেতাকর্মীরা। একের পর এক অভিযোগ তুলছেন নেতা নেত্রীরা। স্থানীয় নেতাকর্মীরাও তার কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন।

শুধু বেপরোয়া আচরণ ও কর্মকাণ্ডই নয়, তার অনিয়ম ফিরিস্তিও যেন শেষ হওয়ার নয়।কখনো নেতাকর্মীকে মারধর, আহ্বায়কের সাথে উগ্র আচরণ এমনকি টাকার কেলেঙ্কারি যেনো তাকে পিছু ছাড়ছে না।

সম্প্রতি গত তিনদিন ধরে টিপুর বিরুদ্ধে ফেসবুকে খোলা চিঠি লেখছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ও মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক আয়শা আক্তার দিনা। সেখানে তিনি টিপুর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ এনেছেন। গত ২২ আগষ্ট রাতে টিপুকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে বেশকিছু লেখা লিখেন বিএনপির এ নেত্রী।

দিনা তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, যেদিন থেকে নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সাবেক এমপি কালাম ভাই এর সাথে রাজনীতি করা শুরু করি সেদিন থেকে দেখেছি কালাম ভাই সবার আগে কর্মিদের নিরাপত্তার চিন্তা করতো।সে নিজে সাফার করতো কিন্তু কখনো তার উপস্থিতি তে কর্মিদের ক্ষতি হতে দিতনা।তৈমুর ভাইকে দেখেছি নিজের পিঠে ঘাড়ে পুলিশের বাড়ী সহ্য করতো কিন্তু কর্মিদের আঘাত করলে ঝাপাইয়া পড়তো।নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাবেক এমপি গিয়াস ভাইকে দেখেছি তার সাথে নেতাকর্মীরা দলীয় প্রোগ্রামে গেলে এ পর্যন্ত যত মামলা খেয়েছে তার প্রত্যেকের দায়িত্ব গিয়াস ভাই নিয়েছে।কারো শারীরিক ক্ষতি হতে দেয়নাই তার দূরদর্শী রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কারনে।সিনিয়র নেতাদের এমনই হতে হয় সহনশীল,দায়িত্বশীল, নমনীয়,দূরদর্শী সম্পন্ন,ব্যক্তিত্ববান।কিন্তু নারায়নগঞ্জ মহানগর বিএনপিতে সদস্য সচিব হিসেবে আবু আল ইউসুফ খান টিপু আসার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির রাজনৈতিক চিত্র পাল্টাতে শুরু করে।সাখাওয়াত সাহেব টিপু ভাই এর দূরব্যবহারের কাছে বরাবরই নিরুপায়। কারন সাখাওয়াত সাহেব ভদ্রলোক। সে জুনিয়রদের সামনে টিপু ভাই এর কাছে অপদস্ত হওয়ার ভয়ে অনেক অত্যাচার মেনে নেয় তা আমরা নারায়নগঞ্জের বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখেছি।সাখাওয়াত ভাইকে কথা বলার জন্য মাইক দেওয়া হয়না তাও আমরা দেখেছি।আমরা দেখেছি কি ভাবে টিপু ভাই এর অপরিপক্ক রাজনীতির কারনে শাওনকে শহীদ হতে হয়েছে।শাওন পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার পর সবাই তাকে কোলে নিয়ে হাসপাতালে দৌড়াচ্ছে সেখানে টিপু ভাই নাই।আজ শাওনের পরিবারের জন্য টিপু ভাই এর ভুমিকা কি জানতে চাই?

দিনা আরও লেখেন, রাজপথে সাখাওয়াত ভাই মাইর খায় পুলিশ তার পাঞ্জাবি ছিড়ে ফেলে টিপু ভাই সেখানে স্পটে নাই।সাগর প্রধানকে পুলিশ যে ভাবে মেরেছে ছেলেটা হাটতে পারছিলো না সেই স্পটেও টিপু ভাই নাই।সবাই মামলা খায় অথচ টিপু ভাইয়ের নামে কোন মামলা নাই।মহানগরের প্রোগ্রাম করতে যাওয়া স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী টিপুর হাতে মাইর খায় অথচ তৈমুর ভাই, গিয়াস ভাই, কালাম ভাইকে কখনো দেখিনাই কোন কর্মীর গায়ে হাত তোলতে।টিপুর হাত থেকে মহিলাদলের নেত্রীরাও রেহায় পায়না মহিলাদলের নেত্রী কেও তার শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও আমরা ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি।টিটু ভাই যেদিন চোখে গুলি খেলো সেদিন জেলা ও মহানগর একসাথে চিটাগাং রোডে বিশাল নেতাকর্মী নিয়ে রাজপথে থাকবে অথচ টিপু ভাই পন্ডিতি করে মহানগরের লোকজন নিয়ে চিটাগাং রোডে উঠলো পুলিশও দেখলো স্বল্প নেতাকর্মী ওমনিতেই পুলিশ চড়াও হয়ে গেলো।পুলিশ মারমুখী আচরণ শুরু করলো ঐদিকে এর প্রভাব পরলো শহীদুল ইসলাম টিটু ভাইয়ের উপর।চোখে পুলিশের গুলি লাগলো আজ তার দুটি চোখই হাড়াতে বসেছে।মাহমুদ ভাই যখন মৃত্যুর কোলে ঢলে পরছিলো তখনো টিপু ফটোসেশান নিয়ে ব্যস্ত।ঠিক মত তার চিকিৎসার টাকাটাও দিলোনা।চলে গেলো চিরতরে না ফেরার দেশে মাহমুদ ভাই। এবার আপনারই বলেন ২০০৬ এ বিএনপি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি এত ক্ষতির স্বীকার হয়নাই যতটা ক্ষতি এই টিপু সদস্য সচিব হওয়ার পর হয়েছে।এই পরিবার গুলোর দায় ভার কে নিবে?

বিএনপি এ নেত্রী আরও লিখেন, প্রোগ্রাম করার জন্য ৮ লক্ষ টাকা কেন্দ্র টিপুকে দিয়েছে অথচ সরজমিনে নাকি একলক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।বাকি টাকা কই গেলো? মাহমুদ ভাই এর পরিবারকে একটা এমাউন্ট ক্ষতিপূরণ হিসাবে দিতে পারতো।শাওনের পরিবার কে ক্ষতিপূরণ হিসাবে একটা এমাউন্ট দিতে পারতো।টাকাগুলো গেলো কই? টিপু ভাই কে যারা চিনে তারা জানে তার তেমন কোন আয়ের উৎস নেই।সারাদিন কোর্টে একহাজার টাকাও ইনকাম করতে পারেনা। কিন্তু এত শানশওকত ভাবে কেমনে চলে।রাজনীতি করতে হলে মহানগরের সদস্য সচিব হলে দলের প্রতি অনেক খরচ করতে হয়।অঙ্গদলের নেতাকর্মীরাই দল চালানোর জন্য যারযার পদ রক্ষার জন্য ঘরের টাকা খরচ করে রাজনীতি করে।সেখানে নারায়ণগঞ্জের মত গুরুত্বপূর্ণ শহরে সদস্য সচিব সাহেব কোন ইনকাম সোর্স থেকে দলের জন্য টাকা খরচ করে? আসলে সদস্য সচিব হওয়ার পর থেকে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে ভিক্ষা বৃত্তি করে বেড়ায় আর ঐ ভিক্ষার টাকা দলের পিছনে খরচ না করে নিজের আখের গোছাচ্ছে।

শাওনের পরিবারের অভিশাপে,শহীদুল ইসলাম টিটু ভাই এর দীর্ঘশ্বাসে,স্বেচ্ছাসেবক দলের যে ছেলেটা তার হাতে থাপ্পড় খেয়েছে ওর নিরব অভিশাপে,নারী নেত্রীর গায়ে হাত তোলার অপরাধে, মাহমুদ ভাই এর পরিবারের দীর্ঘশ্বাসে এমনিতেই ধ্বংস হয়ে যাবে, ধ্বংশ বাবা ওরফে আবু আল ইউসুফ খান টিপু। বানরের গলায় যেমন মুক্তার মালা শোভা পায়না তেমনিই ধান্দাবাজ টিপুকে নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সদস্য সচিব পদ শোভা পায়না।এতগুলি পরিবারের ক্ষতি তার মত অদক্ষ লোকের কারনে হয়েছে।মানুষ দাড়ী রাখলে তাকে নমনীয় দেখায় অথচ টিপু ভাইকে দেখলে মনে হয় কারে জানি কামড় দিব কারে জানি এক্ষুনি মারতে বসব এমন আক্রমণাত্বক চেহারা।মানুষের মন যেমন থাকে তার চেহারায় তা ফুটে উঠে। তাই কেন্দ্রের কাছে এবং নারায়ণগঞ্জের প্রথম সারীর নেতাদের কাছে আমার অনুরোধ এই রাক্ষস এর হাত থেকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিকে অবমুক্ত করা হউক।

Back to top button