সারাদেশ

না.গঞ্জে এসপির প্রেস কনফারেন্স: চাঞ্চল্যকর নয়ন হত্যায় স্ত্রী-মেয়েসহ গ্রেপ্তার ৭

ফতুল্লায় পরকীয়া প্রেমের জেরে একটি কক্ষে অটোচালক নয়নকে আটকে রেখে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং ধারালো ছোরা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা নিশ্চিত করেন পরকীয়া প্রেমিক রাসেল ওরফে ঠোঙ্গা রাসেল (৪৫) ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা (৪০)। এ ঘটনায় পরকীয়া প্রেমিক ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার দুই মেয়েসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

পরকীয়া প্রেমিক ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী খুনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।  

বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। 

গ্রেপ্তার বাকিরা হলেন- নিহতের দুই মেয়ে সুমাইয়া (২০), সানজিদা (১৮), চয়ন (৩৮), মানিক (৩২) ও জুয়েল (৩০)। আটককৃতদের মধ্যে নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা দুই মেয়ে সুমাইয়া-সানজিদা ও চয়নকে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের তথ্যমতে বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার উত্তর শিয়ারচর এলাকার একটি নির্জন স্থানে ড্রামের ভেতর থেকে দুই পা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় অর্ধগলিত অবস্থায় নয়নের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশ অল্প সময়ের মধ্যে তার পরিচয় শনাক্ত করে কয়েক ঘন্টার মধ্যে সন্দেহজনক দুইজনকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন নয়নের স্ত্রী সাবিনা ও তার পরকীয়া প্রেমিক রাসেল। এরপর তাদের দেওয়া তথ্য মতে পুলিশ এদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে পিলকুনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে হামিদা বেগমের বাড়ির সামনে থেকে খন্ডিত ওই দুইটি পা উদ্ধার করে। যে স্থান থেকে নয়নের খন্ডিত পা উদ্ধার করা হয়েছে সেখান থেকেই মানিককে আটক করা হয়। এছাড়া জুয়েলকে ফতুল্লা তার নিজ এলাকা থেকে আটক করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার সঙ্গে আরও কয়েকজনের নাম সন্দেহভাজনের তালিকায় রয়েছে। তাদেরকেও আটকের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ সুপার জানান, গত ১৯ সেপ্টেম্বর নয়ন জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন এবং কিছুদিন পর নতুন ভাড়া করা পশ্চিম দেলপাড়ার বাসায় দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে থাকতে শুরু করেন। সেখানেই রাসেলের সঙ্গে সাবিনার সম্পর্কের বিষয়টি নয়ন জানতে পারেন। এসকল বিষয় নিয়ে নয়নের সঙ্গে সাবিনার ঝগড়া হয়। পরবর্তীতে এসব বিষয় নিয়ে আরও তিক্ততা শুরু হয় তাদের মধ্যে। এর রেশ ধরেই গত রোববার নয়নকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর একদিন নয়নের মরদেহ বাসাতেই ছিল। এরপর গত সোমবার রাতে নয়নের পা দুইটি বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং দেহের উপরিভাগ ড্রামে ভরে শিয়ারচর এলাকার নির্জন স্থানে ফেলে রাখা হয়। বিচ্ছিন্ন করা পা দুইটি পিলকুনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে হামিদা বেগমের বাড়ির সামনে বস্তায় ভরে ফেলে রাখা হয়। পরে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দুর্গন্ধ ছড়ালে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। 

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রত্যেকেই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় নয়নের বাবা বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক কাইয়ুম খান জানান, আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত শুনানী শেষে সুমাইয়া ও সানজিদাকে দুই দিনের এবং পরকীয়া প্রেমিক ও স্ত্রীসহ বাকিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

 

 

Leave a Reply

Back to top button