খানকায়ে শরিফ মসজিদ ও গাবতলী সোসাইটিতে জীবনের কালো থাবা
খানকায়ে শরিফ মসজিদ ও গাবতলী সোসাইটিতে জীবনের কালো থাবা

স্টাফ রিপোর্টার (Somoysokal) সাংবাদিকতার নাম বিক্রি করে রফিকুল ইসলাম জীবন গাবতলী ও ইসদাইরের স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এক আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে।বিভিন্ন সংগঠনের শীর্ষ পদ বাগিয়ে নিয়ে এলাকায় একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার করে জীবন এমনটাই বলছে স্থানীয়রা। এমনকি ধর্মীয় এবং সামাজিক সংগঠনগুলোতে তার সহযোগী পদে বসিয়ে তার অবস্থান পোক্ত করে সকল সেক্টর নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। এবার তার বিরুদ্ধে গাবতলীর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান খানকায়ে শরিফ দখল, মসজিদ কমিটিতে তার নগ্ন হস্তক্ষেপ ও গাবতলী সোসাইটিতে তার অবস্থান নিয়ে বহু তথ্য প্রমাণ হাতে এসেছে এই নিউজ প্রতিবেদকের কাছে। তথ্য মতে, গাবতলীতে বহু পুরোনো ও জনপ্রিয় একটি খানকায়ে শরিফ রয়েছে। এই খানকায়ে শরিফটি দখলের পায়তারা চালায় জীবন ও তার অনুসারীরা। তবে তাতে ব্যর্থ হয়ে জীবনের বন্ধু (একই সাথে তারা জাপানে কর্মরত ছিলো) কাজি এনামূল ফেরদৌস মনা, স্থানীয় একজন শিল্পপতি মতিনসহ আরোও কয়েকজন খানকায়ে শরিফের নামে টাকা সংগ্রহ করে এর পাশেই আরেকটি খানকায়ে শরিফ নির্মাণ করেন। তবে নির্মাণ করলেও সেটা খালিই পড়ে রয়েছে। সেখানে বাসা বেধেছে ইদুর-বিড়ালরা।
জীবনের কিছু অজানা তথ্য তুলে ধরা হলো,,,
# তার বন্ধু এনামুল ফেরদৌস মনাকে সকল কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করছে জীবন
# জীবনের শেল্টারে গাবতলী খানকা দখলের পায়তারা
# স্থানীয় শিল্পপতিকে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও তার ভাইকে কোষাধ্যক্ষ বানিয়ে তার ফ্যাক্টরির ঝুট বাগিয়ে নেন জীবন
# কেউ তার অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুললে তার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন করতো জীবন
# দীর্ঘদিন ধরে কমিটির দায়িত্বে থেকেও কোনো হিসেবে দেন না জীবন
এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলছেন, এই এলাকায় গ্লোরী ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি স্কুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে কারণ এর প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল্লাহ নামের একজন শিক্ষক। তিনি আগে কোচিং সেন্টার পরিচালনা করে পরবর্তীতে স্কুল নির্মাণ করে সফল হয়েছেন কারণ তিনি শিক্ষাদান বিষয়ে অভিজ্ঞ।শুধু তাই নয়, আব্দুস সালাম নামের এক শিক্ষক আইডিয়াল স্কুল নামের এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। তিনিও পূর্বে শিক্ষাদানে বেশ অভিজ্ঞ ছিলেন।এ কারণে তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিয়ে সফল। অন্যদিকে জীবন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা খানকায়ে শরিফ দখলে নিয়ে কিংবা প্রতিষ্ঠা করে কিভাবে পরিচালনা করবে? তাদের তো এ বিষয়ে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা নেই।
শুধু খানকায়ে শরিফ নয়। স্থানীয় বায়তুল মোকাদ্দেস কেন্দ্রীয় শাহী জামে মসজিদ কমিটি নিয়েও জীবন করেছেন নগ্ন হস্তক্ষেপ। তথ্যমতে, এই মসজিদের সভাপতি মির্জা সামসুলের মৃত্যুর পর বেশ কিছু দিন যাবৎ কমিটিহীন ছিলো মসজিদটি। তবে তখনই এখানে থাবা বসায় জীবন। আজমেরী ওসমানের ক্যাডার সন্ত্রাসী ফুটবলার মনির, কামরুল মেম্বার, স্থানীয় ছিঁচকে মাস্তান ও কিশোরগ্যাং সদস্যদের দিয়ে একটি ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে নতুন কমিটি করে ফেলে। সেখানে সভাপতি করেন আউয়াল নামের একজন শিল্পপতিকে। সাধারণ সম্পাদক করেন জীবনের প্রবাস জীবনের বন্ধু মনাকে ও কোষাধ্যক্ষ করেন শিল্পপতি আউয়ালের ভাই মতিনকে।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী বলেন, শিল্পপতি আউয়াল ও তার ভাই মতিন ঢাকা থাকেন।তিনি এখানে নামাজও পড়েন না নিয়মিত। অথচ দুইভাইকে মসজিদ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়েছে জীবন। কারণ তারা শিল্পপতি। তাদের কমিটিতে পদ দিয়ে তাদের গার্মেন্টস থেকে ঝুট বাগিয়ে নেন জীবন। অন্যদিকে শিল্পপতিদের নাম ও তাদের অবস্থানকে ব্যবহার নিজের প্রভাব প্রতিপত্ত ধরে রাখে জীবন। এতে করে সে এক ঢিলে দুই পাখি মারছে।
এছাড়াও শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান ও তাদের ভাতিজা আজমেরী ওসমানের নাম ব্যাবহার করে গাবতলী সোসাইটিতে এক দশক ধরে সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। সেখানেও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন তার বন্ধু মনাকে। সে আর তার বন্ধু মিলে একদশক ধরে কয়েক কোটি টাকা লোপাট করেছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, এই জীবন বাইরে থেকে এসে শামীম ওসমান, সেলিম ওসমানের নাম ব্যাবহার করে সোসাইটিসহ সকল সেক্টরে নিজেকে এবং নিজেদের পছন্দের ব্যাক্তিকে পদ দিয়ে সকল সেক্টর সে নিয়ন্ত্রণ করছে।
স্থানীয়রা আরোও জানান, এই জীবন এর পাশে সব সময় বিতর্কিত লোকদের দেখা যায়। সে বিএনপি নেতা মিজান ও সুরমা সেলিমকে তার হাতিয়ার বানিয়ে সকল সেক্টর নিয়ন্ত্রণ করেন।
তারা জানান, এই রফিকুল ইসলাম জীবনের কারনে গোটা এলাকায় ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। তার অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই তার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন করে হেয় প্রতিপন্ন করে। এতে করে কেউ সাহস করেও তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করেনা।
তার অপকর্মের বিরুদ্ধে গোয়েন্দাদের নজর দিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান এলাকাবাসী।