জিয়ার ম্যুরাল ভাঙ্গায় গণসংহতি আন্দোলনের ক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় শহীদ জিয়া হল মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে ফেলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা। শনিবার (৬ এপ্রিল) গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন ও নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস এক যৌথ বিবৃতিতে এ নিন্দা প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৩ এপ্রিল, রাতে চাষাড়ায় অবস্থিত শহীদ জিয়া হলে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করে জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল চিত্রটি ভেঙ্গে ফেলে। উক্ত প্রাচীন হলটিকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দলের লোকজনদের যে আক্রোশ তা আমরা বরাবরই লক্ষ্য করেছি। বহুবছর যাবত জিয়া হল’কে সংস্কার এবং আধুনিকায়ন না করে বছরের পর বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছিলো। এখন এই জিয়া হল ভেঙ্গে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে তারা। জিয়া হল ভেঙ্গে ফেলার সিদ্ধান্ত এবং রাতের আধারে ম্যুরাল চিত্রটি ভেঙ্গে ফেলা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের মূল্যবোধকে কলঙ্কিত করে।
তারা বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মেজর জিয়াউর রহমানের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা ছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধে জিয়াউর রহমান যুদ্ধ পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালের এপ্রিল হতে জুন পর্যন্ত ১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার এবং পরবর্তীতে জুন হতে অক্টোবর পর্যন্ত যুগপৎ ১১ নম্বর সেক্টরের ও জেড-ফোর্সের কমান্ডার হিসেবে তিনি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, আমরা স্পৃষ্টভাবে মনে করি, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধকে দলীলকরণ করেছে। দলীলকরণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের অবদানকে অস্বীকার করছে। কেবলমাত্র জিয়াউর রহমান নয় এ অঞ্চলের অবিসংবাদী নেতা মওলানা ভাসানীসহ জাতীয় ৪ নেতাকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চাইছে। গত ৩ টি জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধীদলের উপর ব্যাপক দমন-পীড়ন, নির্যাতন চালিয়ে বিরোধীমত দমনের সমস্ত হীন চেষ্টা চালিয়ে এসেছে এবং বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকারসহ সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। কার্যত বর্তমান সরকার বাংলাদেশে একদলীয় স্বৈরাচারী সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে। বেশকিছু দিন ধরে নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ শহীদ জিয়াকে ভেঙ্গে এখানে ‘৬ দফা মঞ্চ’ করার জন্য তোরজোড় শুরু করেছেন। আমরা মনে করি, শহীদ জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল চিত্রটি রাতের আধারে ভেঙ্গে ফেলার সাথে সাংসদের প্রস্তাবিত ছয় দফা মঞ্চ নির্মাণের যোগসূত্র আছে। আমরা এই ঘৃণ্য তৎপরতায় নিন্দা এবং ধিক্কার জানাই।
নেতৃবৃন্দ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা এই ম্যুরাল চিত্রটি রাতের অন্ধকারে ভেঙ্গে ফেলেছে তাদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন হবে।