এক টেবিলে বসেও দু’জন দুইদিকে তাকিয়ে হলো’না কথা !
স্টাফ রিপোর্টার (Somoysokal) নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে শামীম ওসমান ও ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী’র অবস্থান নদীর মতো। এক কুলে শামীম ওসমান আরেক কুলে আইভী। কিন্তু নদীর দুই কুল একসাথে হয়েও কথা বললেন না তারা, তাকিয়ে রইলেন দু’জন দুইদিকে। এমনই দৃশ্য দেখা গেলো একটি ইফতার পার্টি’তে।
বছরের পর বছর ধরে চলছে তাদের এই বিরোধ কোনো ভাগ-বাটোয়ারা কিংবা আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নয়। স্থানীয়রা বলছেন, নীতি ও আদর্শের বিরোধে বিভক্ত তারা। ১৯৭৩ সাল থেকে আইভীর বাবা পৌর পিতা আলী আহম্মেদ চুনকা ও শামীম ওসমানের বাবা সামসুজ্জোহা থেকে বিরোধী শুরু। বর্তমানে তাদের মধ্যেও বিদ্যমান।
আইভী ও শামীমের বিরোধ কেন্দ্র থেকে কয়েক দফা মেটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কাজে আসেনি। ফলশ্রুতিতে স্থানীয় রাজনীতিতে তারা কখনও এক টেবিলে বসেননি। কেউ বসাতেও পারেনি। আগামীতে বিরোধ মিটবে, সম্ভাবনাও ক্ষীণ। তবে গতকাল সোমবার প্রভাবশালী এই দুই নেতার দেখা মিলেছে এক টেবিলে!
এদিন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইনসে পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে আইভী ও শামীম ওসমান এক টেবিলে বসেছিলেন। ইফতারও করেছেন একই সঙ্গে। তবে এক টেবিলে বসলেও কথা হয়নি তাদের।
তাদের সাথে একই টেবিলে আরো উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মাহাবুব হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, তারাবো পৌরসভার মেয়র মন্ত্রী পত্নী হাছিনা গাজী, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই প্রমূখ।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইভীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে লক্ষাধিক ভোটে পরাজিত হন শামীম ওসমান। এরপর থেকে তাদের বিরোধী এক ধাপ এগিয়ে যায়। ২০১৩ সালে চাঞ্চল্যকর ত্বকী হত্যায় এই বিরোধ বেড়ে যায় বহুগণ। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচনে প্রকাশ্যেই আইভীর মনোনয়ন বিরোধীতা করে মাঠে নামেন শামীম ওসমান। এই নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন আইভী। সর্বশেষ ২০২২ সালের নির্বাচনেও আইভীর বিরোধীতা করেছিলেন শামীম ওসমান। এ ছাড়াও ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে হামলার শিকার হয়েছিলেন আইভী। সেই হামলার ইন্ধনদাতা হিসেবে অভিযোগের আঙুল শামীম ওসমানের দিকেই তুলেছিলেন আইভী।